Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ তথ্য বাতায়নে আপনাকে স্বাগতম


ছবি
শিরোনাম
প্রায় ৪০০ বছরের পুরাকীর্তি, ঐতিহাসিক শরীফপুর শাহী জামে মসজিদ
বিস্তারিত

কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বাইশগাঁও ইউনিয়নের একটি গ্রাম শরীফপুর। এই শরীফপুর গ্রামেই অঅবস্থিত প্রায় ৪০০ বছরের পুরাকীর্তি, ঐতিহাসিক শরীফপুর শাহী জামে মসজিদ। যদিও স্থানীয় মানুষের দাবি মসজিদটি প্রায় ৭০০বছরের পুরনো। মসজিদের পাশে আছে সুবিশাল এক দিঘি। যার নাম 'নাটেশ্বর দীঘি'। দিঘির দক্ষিণ-পূর্ব পাড়ে রয়েছে শাহ শরীফ বোগদাদী (রহ.) এর দরগাহ।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, মসজিদের পাশেই নাটেশ্বর দীঘিটি পড়েছে শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী ইউনিয়নের সর্বশেষ সীমায়। রাজা নাটেশ্বর তার নামানুসারে এই দীঘি খনন করেন। ২৭ একর জমির ওপর দীঘিটি খনন করা হয়। এটি কুমিল্লা জেলার সবচেয়ে বড় দীঘি। আট বছর আগে এলাকাটি অধিগ্রহণ করে পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে হায়াত আবদে করিম নামে এক ব্যক্তি এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। এতোদিন ধরে লোকমুখে শোনা 'গায়েবী মসজিদ'-এর যে গল্প শুনে এসেছি। সেটা নিছক গল্প ছাড়া কিছু নয়। সেসময় এ এলাকাটি শাসন করতেন রাজা নাটেশ্বর। হায়াত আবদে করিম নাটেশ্বর রাজার বাড়িতে চাকরি করতেন। একদিন এ এলাকায় শাহ শরীফ বোগদাদী (রহ.) নামে একজন পীরের আবির্ভাব ঘটে। জনশ্রুতি রয়েছে, হযরত শাহ শরীফ বোগদাদী ছিলেন হযরত শাহজালালের অনুগামী। পরে হায়াত আবদে করিম এই শাহ শরীফ বোগদাদী (রহ.)-এর অনুসারী হন। একসময় রাজা নাটেশ্বরও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। অন্যদিকে নিঃসন্তান হায়াত আবদে করিম নিজের বেতনের টাকা দিয়ে দীর্ঘ ২৭ বছর সময় লাগিয়ে নির্মাণ করেছিলেন এ ঐতিহাসিক শাহী জামে মসজিদটি।

অত্যন্ত সুন্দর ও নিখুঁত নকশায় টালি ইট ও চুন-সুরকির ওপর খোদাই করে তৈরি করা হয় তিন গম্বুজবিশিষ্ট এই মসজিদ। মসজিদটি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ৩৬০টি মসজিদের মধ্যে একটি। এই মসজিদকে ঘিরে এলাকাটি হতে পারে একটি পর্যটন কেন্দ্র। এই মসজিদের উত্তর-পশ্চিম কোণে পীর শাহ শরীফ হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও আয়েশা হালিম এতিমখানা রয়েছে। মসজিদের তত্ত্বাবধান করছেন এ মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্ররা।

দীঘিটির দক্ষিণ পাশে রয়েছে বিশাল মাঠ। দীঘিটি কুমিল্লা ও চাঁদপুর এই দুই জেলার সীমান্তবর্তী স্থানে অবস্থিত। দীঘির পশ্চিমপাড়ে 'রায়েরবাগ' নামে একটি গ্রাম প্রতিষ্ঠা করেন রাজা নাটেশ্বর। নাটেশ্বর দীঘির পূর্ব-দক্ষিণ কোণে অবস্থিত পীর হযরত শাহ শরীফ বোগদাদী (রহ.)-এর মাজার। প্রতি বছর এ মাজারে আয়োজন করা হয় বিশাল ওরস ও ওয়াজ মাহফিলের। মসজিদটির পূর্ব পাশদিয়ে বয়ে গেছে ডাকাতিয়া নদী। দর্শনার্থীদের অভিমত, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এ স্থানগুলো ঘুরে বেড়ালে মনে প্রশান্তি জাগে। এসব পুরোনো কীর্তিগুলো গ্রামের শোভাবর্ধনের পাশাপাশি হয়ে উঠতে পারে একটি পর্যটন স্পট।

এলাকাবাসী মনে করে, সরকারের সহায়তা ও প্রচার পেলে শরীফপুর শাহী জামে মসজিদ, দীঘি, মাজার পর্যটকদের কাছে হতে পারে দর্শনীয় স্থান।